ওসমান গনী মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পুরা দুর্গা চরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ড্রেজারের পানিতে তলিয়ে জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। যে মাঠ তৈরী করা হয়েছে খেলাধুলার জন্যে এখোন তা জলাশয়। কয়েকমাস আগেও ওই মাঠ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় যুবকদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে থাকতো আজ সেখানে শুধুই পানি। খেলাতো দূরের কথা পানির কারনে ওই মাঠের উপর দিয়ে হেটেও পারাপার হওয়া যাচ্ছেনা।
সরেজমিনে শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে গিয়ে দেখা যায়, পুরা দূর্গা চরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি পানিতে থৈ থৈ করছে। দির্ঘদীন পানিতে তলিয়ে থাকায় ওই মাঠে গজিয়েছে অনেক জলজ উদ্ভিদ । স্থানে স্থানে জলজ উদ্ভিদ গাজিয়ে ঘন জঙ্গলে পরিনত হয়ে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে মাঠে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এটি জলাবদ্ধতায় ভরে যায়। ফলে মাঠে কোনো খেলা বা অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেমন খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি এলাকার ক্রীড়া সংস্কৃতিও হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি ভরাটের জন্য ড্রেজার ( খনণ যন্ত্র) দিয়ে বালু তোলার সময় খেলার মাঠে ড্রেজারের পানি ছাড়া হয়। এতে মাঠটি পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মাঠটি এখন স্থায়ী জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।
স্থাণীয় যুবক শফিকুল ইসলাম বলেন, মাঠটিতে অন্যান্য বছর এই সময়ে আমরা খেলাধুলা করতাম। কিন্তু এ বছর ড্রেজারের পানি ছাড়ার কারনে খেলাধুলাতো দূরের কথা মাঠের মধ্যে যাওয়াই আমাদের অসম্ভব হয়ে পরেছে বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান, মাঠটি বিদ্যালয়ের গৌরবময় ঐতিহ্যের অংশ ছিল। এখন তা জলাশয়ে পরিণত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা তৈরি হচ্ছে। তারা দ্রুত মাঠটি পুনরুদ্ধার ও পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, মাঠটির ম্ধ্যে নিয়মিত খেলা , ব্যায়াম ও সামাজিক মিলনমেলা হতো। সকালে আশে পাশের মানুষ এ মাঠে হাটতে আসতো। এখন সেখানকার চিত্র একেবারেই ভিন্ন—জলাবদ্ধতার কারণে আশেপাশের এলাকাতেও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন, কোনো অনুমতি ছাড়াই ড্রেজারে পানি বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ছেড়ে দেয়। আমি সেই সময় তাইযুদ্দিন আকনকে একাধিকবার পানি নিষ্কাশনের জন্য বলছি। কিন্তু তারা পানি সরাচ্ছেনা।
এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. হান্নান বলেন, অনুমতি ছাড়া একটা বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে কোনোভাবেই পানি ছাড়তে পারেন না। বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখা হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত তাইযুদ্দিন আকনকে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।