কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বিশেষ অভিযানে ১২ জন মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এ অভিযান চালায়।
বিজিবি জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে গভীর সাগরপথ ও মেরিন ড্রাইভের পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকায় সক্রিয় ছিল কয়েকটি সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র। এসব চক্রের দৌরাত্মে এলাকায় ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। পরে দীর্ঘদিনের গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি মানব পাচার প্রতিরোধে বিশেষ অভিযান শুরু করে।
গত জুলাই ও আগস্ট মাসে পরিচালিত অভিযানে যথাক্রমে ১৫ ও ৪ জন মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
এর ধারাবাহিকতায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর শাহপীরদ্বীপের মোহনায় অভিযান চালিয়ে মিয়ানমারের প্রায় ১০০ নাগরিককে পাচারের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় বিজিবি সদস্যরা। এ সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে চার পাচারকারী। পরবর্তীতে মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন কচ্ছপিয়া ও বড়ইতলি এলাকা থেকে আরও আটজনকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে মানব পাচার, মাদক চোরাচালান ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল বলে গোয়েন্দা অনুসন্ধানে জানা গেছে। পাচারকারী চক্রের মূল হোতা হোসেন, সাইফুল ও নিজামের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট ৬২ জন মানব পাচারকারীকে আটক করেছে বিজিবি। তবে এখনো ২৪ জন পলাতক রয়েছে। এদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন।
বিজিবি আরও জানায়, আটককৃত ১২ জন পাচারকারীকে প্রচলিত আইনে মামলা রুজু করে থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে। অন্যদিকে উদ্ধার হওয়া ১১ ভুক্তভোগীকে নিয়ম অনুযায়ী তাদের নিকটাত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “মানবতা ও দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে সীমান্তে যেকোনো অপরাধ, বিশেষ করে মাদক ও মানব পাচারের বিরুদ্ধে বিজিবির জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে।”