কক্সবাজার প্রতিনিধি :
বিশ্বের অন্যতম মানবিক সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের ভূমিকায় প্রশংসা জানিয়ে জাইকার একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিচালিত সহায়তা কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।
রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে উখিয়ার ৪ নম্বর ও ৪ এক্সটেনশন ক্যাম্পে দিনব্যাপী এই পরিদর্শনে নেতৃত্ব দেন জাইকার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মিস মিয়াজাকি কাতসুরা। তাঁর সাথে ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার মহাপরিচালক মি. ইয়ামাদা তেতসুয়া, ব্যক্তিগত সচিব মি. ইয়োশিদা হায়াকাজু, বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রধান মি. ইচিগুচি তোমোহিদ ও প্রোগ্রাম উপদেষ্টা মি. কুরাহাশি কোজিরো।
আরআরআরসি অফিস সুত্রে জানা যায়, প্রতিনিধিদলটি প্রথমেই ৪ নম্বর ক্যাম্পের বি-১ ব্লকে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) ও কোডেক পরিচালিত ই-ভাউচার ফুড ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার পরিদর্শন করেন। তাঁরা রোহিঙ্গাদের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ই-কার্ড ব্যবহারে চাল, ডাল, তেল, ডিম ইত্যাদি সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় প্রশংসা প্রকাশ করেন।
এরপর প্রতিনিধি দলটি ক্যাম্প-৫ এর বি-৬ ব্লকে UN Women অর্থায়নে অ্যাকশন এইড পরিচালিত উইমেন’স মার্কেট ঘুরে দেখেন। তাঁরা রোহিঙ্গা নারীদের সেলাই, হস্তশিল্প, কৃষিকাজ ও ক্ষুদ্র ব্যবসার প্রশিক্ষণ দেখে অনুপ্রাণিত হন এবং বলেন— “নারীর ক্ষমতায়নই টেকসই শান্তির পথ দেখায়।”
শিশুদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে ইউনিসেফ ও ব্র্যাক পরিচালিত লার্নিং সেন্টার পরিদর্শনকালে প্রতিনিধিরা কিশোর-কিশোরীদের পাঠদানে মুগ্ধ হন এবং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উৎসাহব্যঞ্জক বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, “এই শিশুরাই একদিন মানবতা ও নেতৃত্বের প্রতীক হবে।”
তারা রোহিঙ্গা যুবকদের জন্য পরিচালিত দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রমও ঘুরে দেখেন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে আরও সহায়তার আশ্বাস দেন।
দিনের শেষভাগে ৪ এক্সটেনশন ক্যাম্পের সি-১ ব্লকে UNHCR, এনজিও ফোরাম ও সিএনআরএস পরিচালিত প্রোডাকশন সেন্টারে গিয়ে প্রতিনিধিদলটি রোহিঙ্গা নারীদের হাতে তৈরি নানা পণ্য, হস্তশিল্প ও সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন।
তাঁরা বলেন, “এই মহিলাদের চোখে আশার যে ঝিলিক দেখলাম, সেটাই আমাদের অনুপ্রেরণা।”
পরিদর্শন শেষে বিকাল ৪টার দিকে প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন। বিদায়ের সময় জাইকা প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশ যেভাবে এই মানবিক দায়িত্ব পালন করছে—তা সারা বিশ্বের কাছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত।”